বিজয়ের মাসের প্রথম দিন উদযাপিত

বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনা ও নানা অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে ত্রিশ লাখ শহীদ আর দু’লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতার সাক্ষর বিজয়ের মাস মঙ্গলবার শুরু হয়েছে।

বাংলাদেশের সুদীর্ঘ রাজনৈতিক ইতিহাসে শ্রেষ্ঠতম ঘটনা হলো ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ। সশস্ত্র স্বাধীনতা সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতির কয়েক হাজার বছরের সামাজিক রাজনৈতিক স্বপ্ন সাধ পূরণ হয় এ মাসে।

বাঙালি জাতির সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জন মুক্তিযুদ্ধের অবিস্মরণীয় গৌরবদীপ্ত চূড়ান্ত বিজয় এ মাসের ১৬ ডিসেম্বর অর্জিত হয়। স্বাধীন জাতি হিসেবে সমগ্র বিশ্বে আত্মপরিচয় লাভ করে বাঙালিরা। অর্জন করে নিজস্ব ভূ-খণ্ড আর সবুজের বুকে লাল সূর্য খচিত নিজস্ব জাতীয় পতাকা। ভাষার ভিত্তিতে যে জাতীয়তাবাদ গড়ে উঠেছিল, এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে ঘোষিত স্বাধীনতা পূর্ণতা পায় এ দিনে।

বাঙালির হাজার বছরের স্বপ্নপূরণ হবার পাশাপাশি বহু তরতাজা প্রাণ বিসর্জন আর মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে এই অর্জন হওয়ায় বেদনাবিধূর এক শোকগাঁথার মাসও এই ডিসেম্বর।

বিজয়ের মাসের প্রথমদিন আজ বিভিন্ন সংগঠন বিস্তারিত কর্মসূচি পালন করে। এসব কর্মসূচির মধ্যে ছিল বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন, বিজয়ের মাসকে স্বাগত জানিয়ে সমাবেশ, মানববন্ধন, বিজয় র‌্যালি ইত্যাদি।

মুক্তিযোদ্ধা দিবস বাস্তবায়ন পরিষদ সকাল ১০টায় বিজয়ের মাসের প্রথম প্রহরে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের শিখা চিরন্তনীতে মাসব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা করে। এ ছাড়াও বিজয়ের মাসের প্রথম প্রহরে শিখা চিরন্তনীতে পুষ্পস্তবক অর্পণ এবং দোয়া মাহফিল ও আলোচনা সভার আয়োজন করে।

বিজয়ের মাসের প্রথম প্রহরে মোমবাতি প্রজ্বলনের মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছে আওয়ামী যুবলীগের নেতাকর্মীরা। এসময় তারা যুদ্ধাপরাধী মুক্ত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার শপথ নেন।

মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১২টা ১ মিনিটে রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে মোমবাতি জ্বালিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন তারা।

পরে বিজয়ের মাসে দেশকে যুদ্ধাপরাধী মুক্ত, কলঙ্কমুক্ত এবং সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে দেশবাসীর পাশে থাকার শপথ নেন যুবলীগের নেতাকর্মীরা। নেতাকর্মীদের শপথ বাক্য পাঠ করান দলের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ওমর ফারুক চৌধুরী।

বাংলাদেশ শিশু একাডেমি সোমবার রাজধানীতে জাতীয় পতাকা নিয়ে এক আনন্দ শোভাযাত্রা বের করে। শোভাযাত্রাটি সকালে বাংলাদেশ শিশু একাডেমি প্রাঙ্গণ থেকে শুরু হয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে শেষ হয়।

শোভাযাত্রার উদ্বোধনী পর্বে প্রধান অতিথি হিসেবে মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি এমপি ও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব নাছিমা বেগম।

বঙ্গবন্ধু গবেষণা পরিষদের নেতৃবৃন্দ সকালে এ উপলক্ষে ৩২ ধানমন্ডিতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করে। এ ছাড়াও কলাবাগান থেকে ৩২ ধানমন্ডি পর্যন্ত একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রাও বের করে সংগঠনটি।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর